ভাষা
মানুষের মুখে উচ্চারিত অর্থবোধক ও মনোভাব প্রকাশক ধ্বনি সমষ্টিকে ভাষা বলে।
✓ বাংলা ভাষার উৎপত্তিঃ
বাংলার আদি আধিবাসীদের ভাষা ছিল অস্ট্রিক। এ ভাষা আর্যদের আগমনের পর ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়। আর্যদের ভাষার নাম প্রাচিন বৈদিক ভাষা।পরবর্তীকালে এ ভাষার সংস্কার করা হয়। এভাবে পন্ডিতগন বৈদিকভাষাকে একটি সাহিত্যের ভাষায় রুপ দেন।পুরনো ভাষাকে সংস্কার করা হয়েছিল বলে এর নাম হয় সংস্কৃত ভাষা। অনেকে বলেন সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে। কিন্তু আধুনিক পন্ডিতগন তা মেনে নেন নি। কারন প্রাচীন কালে ব্রাহ্মন ছাড়া সাধারন মানুষ সংস্কৃত ভাষায় কথা বলতো না। সাধারন মানুষের মুখের ভাষার নাম প্রাকৃত ভাষা। প্রাকৃত শব্দের শাব্দিক অর্থ স্বাভাবিক। প্রাকৃত ভাষা থেকে সৃষ্টি হয় দুটি ভাষা। একটি পালি অন্যটি অপভ্রংশ। তবে সাধারন মানুষের মুখের ভাষাটি প্রাকৃত নামেই রয়ে গেল। এ যুগে পূর্ব ভারতের অনেক দেশে নতুন নতুন ভাষার সৃষ্টি হতে থাকে। এগুলো সৃষ্টি হয় অপভ্রংশ ভাষা থেকে। এক সময় এভাবেই সৃষ্টি হয় আমাদের বাংলা ভাষা।
✓ আরো কিছু তথ্যঃ
অধিকাংশের মতে, খ্রিস্টায় দশম শতাব্দীতে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়। তব, ড: মুহম্মাদ শহীদুল্লাহর মতে, খ্রিস্টায় সপ্তম শতাব্দীতে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়। দশম থেকে চতুৃর্দশ শতাব্দীকে বাংলা ভাষার আদিস্তরের স্থিতিকাল ধরা হয়। বর্তমানে পৃথিবীতে সাড়ে তিন হাজারের ওপর ভাষা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে বাংলা একটি ভাষা। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ এবং ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের কয়েকটি অঞ্চলের মানুষের ভাষা বাংলা। বর্তমানে পথিবীতে প্রায় চব্বিশ কোটি লোকের মুখের ভাষা বাংলা। ভাষার জগতে বাংলার স্থান ষষ্ঠ।
✓ বাংলা ভাষা উদ্ভবের ইতিহাসঃ
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে
ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষা (৫০০০-৩৫০০ খ্রিঃ পূর্বাব্দ)———–>>শতম ভাষা——–>>আর্য ভাষা—–>>প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা——->>প্রাচীন ভারতীয় আর্য কথ্য——>>প্রাচীন প্রাচ্য প্রাকৃত—->>গৌড়ী প্রাকৃত (মাগধী প্রাকৃতের প্রাচ্যতর রূপ)——->>গৌড় অপদ্রংশ——>>বাংলা ভাষা